বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৫ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ পুলিশ দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমন, মাদক নির্মূল এবং চোরাচালান দমনে পুলিশের ভূমিকা বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করেছে। এ ছাড়া জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের সাহসী সদস্যরা উল্লেখযোগ্য প্রশংসনীয় অবদান রেখে চলেছেন।
রবিবার (২৩ জানুয়ারি) ‘পুলিশ সপ্তাহ ২০২২’ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে এ কথা বলেন সরকারপ্রধান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ সপ্তাহ-২০২২ উপলক্ষে আমি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সব সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের সদস্যরা পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এর ফলে সূচিত হয়েছিল মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধযুদ্ধ। অকুতোভয় পুলিশ সদস্যদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সেদিন দেশমাতৃকার জন্য আত্মাহুতি দিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পুলিশ বাহিনীর প্রায় ১৪ হাজার বাঙালি পুলিশ সদস্য কর্মস্থল ত্যাগ করে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে ১ হাজার ১০০ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্য শহীদ হন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি কভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জনগণের সেবায় ১০৬ জন নির্ভীক পুলিশ সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমি মহান মুক্তিযুদ্ধে ও বিভিন্ন সময়ে দেশের জন্য আত্মোৎসর্গকারী পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা ও শ্রদ্ধা জানাই।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর বাংলাদেশ পুলিশের জনবল ধাপে ধাপে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি করেছে। পেশাগত উৎকর্ষ সাধনে পুলিশে পদোন্নতি ও পদমর্যাদা বৃদ্ধিতে আমাদের সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমরা বাংলাদেশ পুলিশে নতুন পদ সৃষ্টির মাধ্যমে পুলিশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতিপ্রাপ্তির জটিলতা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। একই সঙ্গে গ্রেড-১ ও গ্রেড-২ পদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। তা ছাড়া শিল্পাঞ্চলের জন্য ২০১০ সালে শিল্প পুলিশ ইউনিট ও পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য ২০১৩ সালে ট্যুরিস্ট পুলিশ ইউনিট গঠন করি।
তিনি বলেন, আমাদের সরকার থানা, ফাঁড়ি তদন্ত কেন্দ্র, ব্যারাক, আবাসিক ভবন নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দসহ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসাসেবার লক্ষ্যে ১০ তলা বিল্ডিং করে রাজারবাগে পুলিশ হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন। প্রতি বিভাগে একটা করে হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। আকাশপথে সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে পুলিশের গতিশীলতা ত্রিমাত্রিক পর্যায়ে উন্নীতকরণের জন্য ইতোমধ্যে রাশিয়া থেকে দুটি হেলিকপ্টার ক্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ বাহিনীকে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী, দক্ষ ও জনবান্ধব বাহিনীতে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ফলে পুলিশ সদস্যদের কার্যক্রমে এসেছে গতিশীলতা এবং কর্মচাঞ্চল্য।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, জনগণের সেবা করাই পুলিশ বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের পবিত্র দায়িত্ব। সেখানে কোনো ধরনের অনুরাগ বা বিরাগের সুযোগ নেই। দায়িত্বে অবহেলা বা নৈতিক পদস্খলন অমার্জনীয় অপরাধ। আমি আশা করি, বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা মানবিক মূল্যবোধ সমুন্নত রেখে দক্ষতা, পেশাদারি ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন এবং জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবেন। আমি ‘পুলিশ সপ্তাহ ২০২২’-এর সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।